প্রাথমিক কথা

প্রাথমিক কথা

FOR YOUR COMMENTS

Click "[_] commetns:" at bottom of Post

Monday, December 23, 2013

রাজনীতিকদের ক্ষোভ, " সব রাজনৈতিক দলের সব নেতা কর্মীরাই কি দূর্নীতিগ্রস্ত খলনায়ক? না হলে রাজনীতিকে সমর্থন জানানোর প্রবণতা কমছে কেন?" (২৩-১২-২০১৩-র পোস্ট )



২০১৩-র চারটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে শেষপর্যন্ত দিল্লিতে আম আদমি পার্টি সরকার গড়ল এবং সম্ভবত কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী হবেননির্বাচনে কংগ্রেস-৮, আপ (আম আদমি পার্টী)-২৮ এবং বিজেপি-৩২ টি আসন পেয়েছেসরকার গড়তে লাগে ৩৬টি আসনকংগ্রেস ও বিজেপি নিজেদের শত্রুতা সত্ত্বেও আপ ছিল এই দুটি দলের সাধারণ শত্রুভোটের পরে কংগ্রেস ও বিজেপির চাপে, তাদের পরিপক্ক রাজনীতিকদের রাজনৈতিক প্যাঁচে পড়ে আপ আধুনিক প্রযুক্তিতে বাধাহীন গণভোট নিল এবং শেষপর্যন্ত কংগ্রেসের সমর্থনে সরকার গড়ল

সরকার গড়া ও না-গড়া দুটোই আপের সামনে ছিল বিপদসেদিক থেকে এই দুটির মধ্যে সরকার গড়ার পথটাই আপ বেছে নিলএবার দেখার তারা কী করে

দিল্লির এই নির্বাচনের দিকেই অন্তত এই মূহূর্তে  মাছের চোখ শিকারের দৃষ্টিতে সকলের নানাদিকের হিসেব নিকেশ চলছে

প্রধান আলোচ্য হচ্ছে... আপ আগামী লোকসভায় কি ফল অর্জন করবেসারা দেশের মানুষ বিশেষত কংগ্রেস এবং সাধারণভাবে সব কটি রাজনৈতিক দলের ওপর বীতশ্রদ্ধ ও ক্ষুব্ধরাজনৈতিক দলে ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণের প্রবণতা কমছেএ অবস্থায় লোকসভা নির্বাচনে মানুষ কি আপের সমর্থনে দাঁড়াবে?

সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে বিশেষত তরুণ বয়সীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ প্রশ্ন আকারে এলআপ প্রধানত দূর্নীতি, রাজনৈতিক কলুষতা, রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের ব্যক্তিগত জীবনে দূর্নীতি ও বিলাস সেই সরে যাওয়া ভোটারদের রাজনীতির বাইরের কোন দলকে সমর্থনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছেরাজনীতিকরা বলছেন এ প্রবণতা ভয়ংকরতাঁরা তাঁদের কথার সমর্থনে ক্ষুব্ধ হয়ে বলছেন, সব কটি রাজনৈতিক দলের সব নেতা-কর্মী কি দূর্নিতিগ্রস্ত খলনায়ক নাকি?

এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাঁদের বিভিন্ন নেতাকে প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী হিসেবে সামনে আনছেন
আমরা এগুলো একটু বিচার করি
১)     আমাদের দেখা নির্বাচনের ফলাফলের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি আম  আদমি পার্টি সারা দেশে যথেষ্ট সংখ্যক প্রার্থী দিতে পারলে, যার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে, আপ একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলে পরিণত হবেশুধু প্রতিটি আসনে মানুষের কাছে তাদের অংশগ্রহণের বার্তা পৌঁছে দিতে হবেএই প্রচারে তাদের বড় সুবিধে হবে... সাধারণ মানুষই সমর্থনে, আনন্দে, নিস্তারের সাময়িক স্বস্তিতে, কৌতূহলে, হুজুগে সর্বত্র এই প্রচারের কাজ করে দেবেন
২)     এটা সত্যি যে সব কটি রাজনৈতিক দলের সবকজন নেতা-কর্মী দূর্নীতিগ্রস্ত খলনায়ক ননঅনেক ভাল মানুষ, শিক্ষিত মানুষ, যোগ্য মানুষ তাঁদের মধ্যে ছিলেন এবং এখনো হয়তো সংখ্যাগরিষ্ঠ তাঁরাই কিন্তু তাই থেকে কি একথা বলা যাবে যে সেই সমস্ত সৎ, ভাল, শিক্ষিত মানুষেরা যথাযথ নায়কের ভূমিকা পালন করতে পারছেন? একথা কি বলা যাবে সেই ভাল মানুষেরা অল্প সংখ্যক আদর্শচ্যুত দূর্নীতিগ্রস্ত জনবিরোধী খলনায়কদের দাবিয়ে রেখে নিজেরা সুস্থ, সৎ, বিশ্বাসযোগ্য রাজনীতি করতে পারছেন? কয়েক ৪/৫ দশক আগেও তো এতটা দৈন্য দেখা যায়নিতখন তো কিশোর থেকে বৃদ্ধ স্বেচ্ছায় ত্যাগ ও সংগ্রামের মানসিকতা নিয়ে রাজনীতিতেই ঝাঁপিয়ে পড়তেন, আক্রান্ত হতেন, জেল খাটতেন, প্রাণ দিতেন কিন্তু পিছপা হননি। সবকটি রাজনৈতিক দলের অতীত ইতিহাস তাই। বাম, অতিবাম আন্দোলন ও সংগঠন তো তাদের নিয়েই গড়ে উঠেছিলতবে আজকে বিপরীত চিত্র কেন? এর জন্য দায়ী খলনায়ক-সুনায়ক উভয়েইকেউ দায় এড়াতে পারেন না

        ৩) কোন একটি গোষ্ঠী যখন নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকার গঠন করে সে তখন অবধারিতভাবে একটি নির্ধারিত রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে প্রবাহিত হয় এবং রাজনৈতিক চরিত্র অর্জন করেঅবশেষে রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়আপ ইতিমধ্যেই একটি তেমন দলে পরিণত হয়েছে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়

    ৪)    প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে এই সময়তে যেটুকু বলা যায়... কংগ্রেস নেতা রাহুলের কথায় আমরা কোন পরিপক্কতা দেখতে পাচ্ছিনাযা দেখছি অপরিপক্ক সারল্যতিনি যেখানে যা বলার নয় সেখানে তাই বলছেনতার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে কংগ্রেস দলের থেকে মানুষ সরে গেছেমানুষ আর কংগ্রেস দলকে বিশ্বাস করেনাযেমন উনি বলেছেন প্রথমত দূর্নীতি আমাদের নেতাদের রক্তশূন্য করে দিয়েছে...  দ্বিতীয়ত কংগ্রেস দল সম্পর্কে কাগজে ভাল খবর লিখলে সে কাগজ বিক্রি হয়নাতার মানে কংগ্রেস দল কোন ভাল কাজ করছে একথা কেউ বিশ্বাস করেনাসর্বোচ্চ নেতৃত্বের একজন এমনকি প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী একথা বললে পরিণতি কী হতে পারে? আবার কোথাও যদি ভুল হয়ে যায়, পরক্ষণে তিনি বলেন, মা বলেছেন, আমার ভুল হয়েছে, আমি তাই বলছি আমার ভুল হয়েছেএহেন অপরিপক্ক সারল্য দেখার জন্য তাকে বা তার দলকে কেউ আসন ছেড়ে দেবে কিনা সন্দেহ আছে

   ৫)     সি পি আই এম নেতা প্রকাশ কারাত পরিস্থিতি ব্যখ্যার পর বলছেন,  কংগ্রেস নয়, বিজেপিও নয় একমাত্র সম্ভাবনা আছে বামপন্থীরা এবং সমস্ত আঞ্চলিক দলগুলি সরকারে যাওয়ার অবস্থায় আসবেএ বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা আদৌ সম্ভব নয়, কারণ সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস-বিজেপির চাইতেও বেশি এবং সরকার গড়ার মত আসন সি পি আই এম পাবেনা যার শক্তিতে তারা অন্যদের আকৃষ্ট করতে পারে


সেজন্যে, একথা বলাই যায়, লোকসভা নির্বাচন ২০১৪ একটা নতুন পরিস্থিতি তৈরি করে দেবে 

No comments:

Post a Comment